মঙ্গলবার, ৯ মে, ২০১৭

ওহাবী কারা?

ওহাবী কারা?

________________________
যেই সমস্ত সুন্নী ভাই ও বোনেরা
১. ‘তাওহীদ’ বা আল্লাহর একত্ববাদকে মনে-প্রাণে ভালোবাসেন, 
২. জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর ‘সুন্নাহ’ বা আদর্শ অনুসরণ করার চেষ্টা করেন,
৩. পীরপূজা, কবর-মাযার পূজা, অন্ধ দলীয় গোড়ামি থেকে দূরে থাকেন এবং
৪. ধর্মের নামে যাবতীয় শিরক-বিদাত ও কুসংস্কারকে অন্তর থেকে ঘৃণা করেন
সেই সমস্ত প্রকৃত মুসলমানদেরকে বিদাতপন্থী সূফীরা ‘ওহাবি’ বলে গালি দেয়।
অজ্ঞ লোকেরা না জেনে শিরক বেদাতকে ধর্ম বলে মনে করে এবং শিরক বিদাতের বিরোধীতাকারী সম্মানিত আলেমদেরকে ইসলামের দুশমন বলে মনে করে, তাদের নামে মিথ্যা কথা প্রচার করে বেড়ায়, আল্লাহু মুস্তাআ’ন! মূলত পীরের মুরিদ আর মাযারভক্ত সূফীরা একজন সৌদি ‘মুজাদ্দিদ’, ‘শায়খুল ইসলাম’ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ এর নাম অনুসারে এই গালি দিয়ে থাকে।
________________________
মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ কে ছিলেন?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ তাআ’লা প্রতি একশ বছরের মাথায় এই উম্মতের জন্য এমন একজনকে পাঠাবেন যিনি দ্বীন-ইসলামকে সংস্কার করবেন।” 
সুনানে আবু দাউদঃ হাদিস নং- ৪২৯১, শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
সৌদি আরবের ‘শায়খুল ইসলাম’ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ (জন্ম ১৭০৩, মৃত্যু ১৭৯২ ইং) ছিলেন একজন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন ও তাঁর সময়ের একজন ‘মুজাদ্দিদ’ বা দ্বীনের সংস্কারক। তাঁর সময়ে বর্তমান আরব বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় ওলি আওলিয়াদের ভালোবাসা, তাদের ওসীলা ধরে জান্নাত যাওয়া ও তাদের মাযারকে কেন্দ্র করে অনেক শিরক ও বেদাত প্রচলিত ছিলো। এমনকি আমাদের দেশের অজ্ঞ লোকেরা যেমন আজমীর, বায়েজিদ বোস্তামি, শাহ জালাল ইত্যাদি মাযারে যায় সন্তান ও টাকা-পয়সা পাওয়ার জন্য, ঠিক তেমনি আরবের নামধারী মুসলমান সমাজের অনেক নারীরা হজ্জ-ওমরা করে মক্কার অদূরে একটা পুরুষ খেজুর গাছ জডিয়ে ধরে তার কাছে সন্তান কামনা করতো, নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক।
ইসলামের মূল ভূমিতে এইরকম শিরক ও বেদাতের ব্যপকতা লাভ করলে মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ আল্লাহর ইচ্ছায় মক্কা ও মদিনাহ থেকে পীর পূজা, কবর-মাযার পূজাকে উৎখাত করার জন্য মানুষকে ‘দাওয়াত’ দেন এবং শিরক বিদাতের বিরুদ্ধে আমৃত্যু ‘জিহাদ’ করেন। তিনি বাদশাহ মুহাম্মদ বিন সউদ রহঃ এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে পবিত্র মক্কা ও মদীনাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্বুরআন ও সুন্নাহর আইন চালু করে আল্লাহর কালিমাকে উঁচু করেন, যার ধারাবাহিকতায় আজ পর্যন্ত সৌদি আরবে আল্লাহর আইন অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হচ্ছে, ফা লিল্লাহিল হা’মদ।
কবর মাযার পূজার বিরোধীতা করার কারণে এবং মাযারগুলো ভেঙ্গে দিয়ে ভন্ড সূফীদের ধর্মব্যবসা নষ্ট করে দেওয়ার কারণে আমাদের দেশের পীরপন্থী এবং মাযারভক্ত সূফীরা শায়খুল ইসলাম মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ কে গালিগালাজ করে এবং তার নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়। আর তাঁর নাম অনুসারেই ‘তাওহীদ’ ও ‘সুন্নাহর’ অনুসারী মুসলমানদেরকে তারা ‘ওহাবী’ বলে গালি দেয়। শায়খের নামে প্রচার করা কিছু মিথ্যা প্রোপাগান্ডা এবং সংক্ষেপে তার জবাব নিচে দেওয়া হলো।
________________________
১. “নাজদী”
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ‘নাজদ’ নামক এলাকার ফিতনাহ থেকে আমাদেরকে সতর্ক করেছেন, সেখান থেকে ফেতনা ও দুঃখ দুর্দশা বের হয় এবং নাজদকে তিনি ‘শয়তানের সিং’ ও বলেছেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) একদিন আলোচনা করছিলেন। এক সময় তিনি বললেন, “হে আল্লাহ্! আমাদের জন্য আমাদের সিরিয়ায় বরকত দাও। হে আল্লাহ্! আমাদের জন্য আমাদের ইয়ামানে বরকত দাও”।. লোকেরা বলল, আমাদের নজদেও (অর্থাৎ আমাদের নজদের জন্যও দুয়া করুন)।. রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেন, “হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আমাদের সিরিয়ায় বরকত দাও। হে আল্লাহ্! আমাদের জন্য বরকত দাও আমাদের ইয়ামানে”।. লোকেরা বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমাদের নজদেও। (বর্ণনাকারী সাহাবী বলেন) আমার মনে হয়, তৃতীয়বারে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বললেনঃ “সেখানে তো কেবল ভূমিকম্প আর ফিতনাহ। আর সেখান (নাজদ এলাকা) থেকেই শয়তানের শিং উদিত হবে।”
সহিহ বুখারী, খন্ড ২, অধ্যায় ১৭, হাদিস নং- ১৪৭ এবং সহিহ বুখারী, খন্ড ৯, অধ্যায় ৮৮, হাদিস নং- ২১৪।
বিদাতীরা বলে মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ এর জন্মস্থান হচ্ছে সৌদি আরবের ‘নাজদ’ এলাকায়। সুতরাং তিনিই হচ্ছেন সেই ‘নাজদী’ ফেতনাহ, যার ব্যপারে রাসুল সাঃ আমাদেরকে সতর্ক করেছেন।
বিভ্রান্তির জবাবঃ
ক্বুরান ও হাদীস এর সঠিক অর্থ ও ব্যখ্যা না জেনেই মনগড়া অপব্যখ্যা করে হক্কের বিরোধীতা করা হচ্ছে মনপূজারী বিদাতীদের জন্মগত স্বভাব। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর যামানায় আরবের ৭ থেকে ১৩টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গাকে ‘নাজদ’ নামে ডাকা হতো। নাজদ অর্থ হচ্ছে ‘উঁচু জায়গা’, আমাদের দেশে যেমন, ‘উজান’ বা ‘ভাটি’ বলতে অনেক জায়গাকেই বুঝানো হয়, ঠিক তেমনি তৎকালীন সময়ে আরবের ‘নাজদ’ বলতে উঁচু যে কোন জায়গাকেই বোঝানো হতো। সবগুলো সহীহ হাদীস একত্র করলে পরিষ্কারভাবে যা বুঝা যায় সেট হচ্ছে, রাসুল সাঃ ‘নাজদ’ বলতে যেই এলাকার ফেতনা থেকে আমাদেরকে সতর্ক করছেন, সেটা হচ্ছে ইরাক, বর্তমান সৌদি আরবের কোন জায়গা নয়। আর সত্যিই রাসুল সাঃ এর মৃত্যুর পর থেকে আজ পর্যন্ত ইরাক হচ্ছে মুসলমানদের জন্য ফেতনাহ সৃষ্টি এবং দুঃখ দুর্দশার স্থান। এই ইরাকেই হুসাইন রাঃ কে বিশ্বাসঘাতকতা করে হত্যা করা হয়েছিলো, মুতা’জিল্লা, কাদেরিয়া, খারেজী ইত্যাদি ভ্রান্ত ফেরকার উৎপত্তি ইরাকে, অত্যাচারী জালেম শাসকের উত্থান ইরাকে। সর্বশেষ, আইসিস নামক বর্তমান খারেজী দলের উত্থানও হয়েছে ইরাক থেকেই। এমনকি, ইমাম নববী রহঃ বলেছেন, দাজ্জাল ইরাক অর্থাৎ তথাকথিত এই নজদ থেকেই আত্মপ্রকাশ করবে, যা ইতিহাসের সবচাইতে ভয়াবহ মারাত্মক ফিতনাহ সৃষ্টি করবে।
হাদীসে উল্লেখিত ‘নাজদ’ এর ব্যাখ্যাঃ
ক. শায়খুল ইসলাম, ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ (জন্ম ১৩৭২, মৃত্যু ১৪৪৮) তাঁর রচিত বুখারী শরীফের অসামান্য ব্যখ্যাগ্রন্থ ‘ফতহুল বারী’ তে ‘নাজদ’ এর অর্থ লিখেছেন, “নাজদ এর অবস্থান হচ্ছে পূর্ব দিকে। সুতরাং মদীনাতে অবস্থানরত কারো জন্য ‘নাজদ’ হচ্ছে পূর্ব দিকে, অর্থাৎ ইরাকের মরুভূমির এলাকা।”
ফতহুল বারীঃ ১৩/৫৮-৫৯।
খ. দ্বাদশ শতাব্দীর বিখ্যাত মুসলিম ঐতিহাসিক, আলি ইবনে আসির রহঃ যিনি সালাউদ্দিন আইয়ুবী রহঃ এর সময়ে বেশ কয়েকবার ইরাকে ভ্রমণ করেছিলেন, তিনি লিখেছেন, “নাজদ অর্থ হচ্ছে উঁচু ভূমি যা কিনা হিজ্জাজ (মক্কা ও মদীনার) বাইরে ইরাকে অবস্থিত।”
আল-নিহায়াহঃ ৫/১৮।
গ. ইমাম নববী রহঃ (জন্ম ১২৩৩ মৃত্যু ১২৭৭) এই হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেছেন, “এই নাজদ হচ্ছে পূর্বদিকে (অর্থাৎ ইরাকে), আর ‘শয়তানের শিং’ এর দ্বারা রাসুল সাঃ দাজ্জালের আবির্ভাবের ফেতনাকে বুঝিয়েছেন।”
সহীহ মুসলিম এর শরাহঃ ২/২৯।
সুতরাং সম্মানিত পাঠক আপনারাই বিবেচনা করুন, শায়খুল ইসলাম মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ এর জন্মের প্রায় ৩৫০ বছর পূর্বে ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী রহঃ, প্রায় ৫০০ বছর পূর্বে ইমাম নববী রহঃ এবং প্রায় ৪৫০ বছর পূর্বে ইবনে আসির রহঃ হাদীসের আলোকে ‘নাজদ’ এর অর্থ করেছেন “ইরাক”, সৌদি আরবের ‘নাজদ’ বা অন্য কোন এলাকা নয়। আর মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব এর জন্মস্থান হচ্ছে উয়াইনা, যা বর্তমানে সৌদি আরবের নাজদ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। সুতরাং, একথা নিঃসন্দেহে প্রমানিত হয় যে, সূফীরা রাসুল সাঃ এর হাদীসের ভুল অর্থ করে একজন মুজাদ্দিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। সহীহ বুখারীর হাদিসে আছে, “মহান আল্লাহ তাআ’লা বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোন ওয়ালীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে, স্বয়ং আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি।”
সুতরাং বিদাতী সূফীদের ভয় করা উচিৎ, একজন সম্মানিত মুজাদ্দিদ আলেমের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাঁর সাথে শত্রুতা করার ব্যপারে।
________________________
২. শায়খের নামে আরেকটা মিথ্যা অপবাদ দেয় সূফীরা, শায়খ অলি-আওলিয়াদেরকে সম্মান করেন না। তাদের দাবী হচ্ছে, শায়খ মাযারগুলো ভেঙ্গে দিয়ে আল্লাহর ওয়ালীদেরর সাথে শত্রুতা এবং বেয়াদবী করেছেন!?
বিভ্রান্তির জবাবঃ
আমরা আল্লাহর অলি-আওলিয়াদেরকে ভালোবাসি ও সম্মান করি, তার মানে এইনা যে, আল্লাহর অলিদের মৃত্যুর পর তাদের কবরকে মাযার বানিয়ে তার পূজা করতে হবে। বরং কবরকে পাকা বা ইট দিয়ে বিল্ডিং করা ইসলাম হারাম করে দিয়েছে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, সমস্ত মাযার এবং পাকা কবরকে ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে।
=> রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কবর পাকা করতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেনঃ
জাবির (রাঃ) বলেন, “আল্লাহর রাসুল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম কবর পাকা করতে, কবরকে বসার স্থান হিসেবে ব্যবহার করতে এবং কবরের উপর বিল্ডিং (মাযার) বানাতে নিষেধ করেছেন।” [সহীহ মুসলিম]
=> কবরের সামনে লাইট বা বাতি জ্বালানো হারাম সাব্যস্ত করে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ “হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম লানত করেছেন অধিক কবর যিয়ারতকারীনী নারীদের উপরে, এবং সেসব লোকদের উপর যারা কবরকে মসজিদ বানায় (কবরকে সেজদা করে, কবরকে কেন্দ্র করে মসজিদ বানায় বা কবরে নামায পড়ার জায়গা বানায়) এবং সেখানে বাতি জ্বালায়।”
জামি তিরমীযীঃ ২/১৩৬।
=> উঁচু পাকা কবর থাকলে রাসুল সাঃ সেটা ভেঙ্গে মাটিতে মিশিয়ে দিতে আদেশ করেছেনঃ
আবুল হাইয়াজ আল আসাদী নামে একজন তাবেয়ী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী বিন আবু তালিব রাদিআল্লাহু আনহু আমাকে বলেছেন যে, “আমি কি তোমাকে সেই দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করব না, যেই দায়িত্ব দিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে প্রেরণ করেছিলেন? তাহলো তুমি যেখানেই প্রতিমা ও ভাস্কার্য দেখবে ভেঙ্গে ফেলবে এবং যেখানেই উঁচু কবর দেখবে সেটা ভেঙ্গে মাটির সাথে সমান করে দেবে।” [সহীহ মুসলিমঃ ২২১৫]
সুতরাং, মাযার ভেঙ্গে দিয়ে মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ আসলে ইসলামের নির্দেশ মান্য করেছেন। সুতরাং, মাযার ভাংগার বিরোধীতা যারা করবে, তারা মূলত রাসুল সাঃ এর বিরোধীতা করলো, আর রাসুলের বিরোধীতাকারীরা হচ্ছে জাহান্নামী।
________________________
৩. হিযবুত তাহরীর, আল-কায়েদাহর মতো ভ্রান্ত রাজনৈতিক দলের অনুসারী অজ্ঞ লোকেরা দাবী করে, শায়খ তুর্কি খিলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন আর একারণেই তুর্কি খিলাফতের পতন হয়েছিলো। সুতরাং তিনি খারেজী!?
বিভ্রান্তির জবাবঃ
মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ এর সময় তৎকালীন ‘হিজাজ’ অঞ্চলে তুর্কি শাসন কায়েম ছিলোনা, সুতরাং শায়খের তুর্কী শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার প্রশ্নই আসেনা। এটা শায়খের নাম জঘন্য মিথ্যা একটা অপবাদ। তুর্কি শাসন আমলে মানুষদের ভ্রষ্টতার কারণেই তাদের পতন হয়েছিলো। বিস্তারিত জানার জন্য আপনারা IslamQA এর এই আর্টিকেল দেখতে পারেনঃ
Did Shaykh Muhammad ibn ‘Abd al-Wahhaab rebel against the Ottoman Caliphate and what was the reason for its fall?

________________________
৪. কট্টরপন্থী মাযহাবী ও গোড়া মুকাল্লেদ অনেকেই দাবী করে শায়খ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ মাযহাবকে অস্বীকার করেছেন এবং ইমামদেরকে গালি-গালাজ করেছেন!?
বিভ্রান্তির জবাবঃ
নাউযুবিল্লাহি মিন যালিক, এটা একেবারেই বানোয়াট ও মিথ্যা অপবাদ। মিথ্যুকদের ব্যপারে আল্লাহ্‌ বলেছেন, “মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লানত।”
মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ মাযহাবকে অস্বীকার করেন নি, বরং তিনি ‘ইমাম আহলে সুন্নাহ’ আহমাদ ইবনে হামবাল রহঃ এর মাযহাবের অনুসারী ছিলেন। তবে তিনি ‘তাকলিদ’ বা মাযহাবের অন্ধ আনুগত্য করতেন না। মাযহাবের যেটা ক্ক্বুরান ও সুন্নাহ সম্মত সেটা তিনি মানতেন এবং যেটা ক্বুরান ও সুন্নাহ সম্মত নয় সেটাকে ছেড়ে দিতেন, গোড়ামি করে মাযহাবের ভুল আমলকে আঁকড়ে ধরে থাকতেন না। এছাড়া তিনি পূর্ববর্তী সমস্ত ইমাম ও আলেমদেরকে সম্মান করতেন। আপনারা তাঁর লিখিত বই-পুস্তক পড়লেই প্রমান পাবেন। যে বলে শায়খ ইমামদেরকে গালি দিয়েছেন, তার জন্য ওয়াজিব হচ্ছে প্রমান দেওয়া কোথায় তিনি গালি দিয়েছেন। প্রমান ছাড়াই আন্দাজে বা মিথ্যুকের কথা বিশ্বাস করে কেউ যদি শায়খের নাম বদনাম করে বেড়ায় তাহলে কাল কেয়ামতের দিন সে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার পাপের বোঝা নিয়ে উঠবে।
________________________
৫. শায়খুল ইসলাম মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ এর জীবনী ও দাওয়াত সম্পর্কে আরো জানার জন্য আপনারা শায়খ সাইফুদ্দিন বেলাল মাদানীর এই লেকচারটা দেখুন –
শায়খের জীবনী –
https://www.youtube.com/watch?v=2OmlDMq3UzE
শায়খের দাওয়াত –
https://www.youtube.com/watch…
________________________
এছাড়া IslamQA এর আর্টিকেলগুলো দেখতে পারেন –
Who are the Wahhaabis and what is their message?
http://islamqa.info/en/10867
Muhammad ibn ‘Abd al-Wahhaab – a reformer concerning whom many malicious lies have been told
http://islamqa.info/en/36616
The truth about Shaykh al-Jilaani and Shaykh Ibn ‘Abd al-Wahhaab
http://islamqa.info/en/12932
________________________
শায়খুল ইসলাম মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহহাব রহঃ এর লিখিত উল্লেখযোগ্য কিছু বইয়ের নাম ও ডাউনলোড লিংক নিচে দেওয়া হলো। আপনারা “তাওহীদ” এর উপর শায়খের লেখে বইগুলো অবশ্যই কিনবেনঃ
১. বইয়ের নামঃ “কিতাব আত-তাওহীদের ব্যাখ্যা”
মূল - শায়খুল ইসলাম মুহাম্মাদ বিন আব্দুল ওহহাব (রহঃ)
ব্যখ্যাঃ শায়খ সালিহ বিন আব্দুল আজীজ ও শায়খ মুহাম্মাদ বিন ইব্রাহীম (রহঃ), তাওহীদ পাবলিকেশান/দারুস সালাম পাবলিকেশান, দাম – ১৫০টাকা। এই বইটা পড়ে সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাওহীদ ও শিরক সম্পর্কে জানতে পারবেন।
http://islamhousebd.wordpress.com/kitabut-tawhid/
আপনারা মিথ্যা অপপ্রচারে ধোঁকা খাবেন না। ক্বুরান ও সহীহ হাদীস পড়ুন, হক্ক ও বাতিল নিজে যাচাই করে দেখুন।
________________________

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন